পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে অস্থায়ী গুদাম স্থাপনের জন্য যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সচল রাখার জন্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই গুদাম তৈরি করা হবে। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিএমইএ।
গত ১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের কারণে আমদানি শেডটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে কার্গো ভিলেজে থাকা তৈরি পোশাক খাতের অনেক স্যাম্পল বা নমুনা পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব স্যাম্পল ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া হয়েছিল, এবং কারখানাগুলো এই স্যাম্পলের ভিত্তিতে পোশাক তৈরি করে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে পোশাকশিল্পের আমদানি কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে এমন ক্ষতি এড়াতে তৃতীয় টার্মিনালে (যা বর্তমানে পণ্য সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত নয়) অস্থায়ী সমাধান হিসেবে দ্রুত সময়ে ‘রাব হল’ স্থাপন করা হবে। গত ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করা হয়। কার্গো ভিলেজের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এবং আমদানি পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্থায়ী গুদাম স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান ও বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ উভয় সংগঠনের সিনিয়র নেতারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজের বিকল্প ব্যবহারের মাধ্যমে আমদানি পণ্য নিরাপদ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে ৫০০টি পোশাক কারখানার স্যাম্পল বা নমুনা পুড়ে নষ্ট হয়েছে। বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, এ ঘটনায় সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ আট মিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ১০০ কোটি টাকার সমান। তবে প্রত্যক্ষ ক্ষতির বাইরে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্যাম্পল পুড়ে যাওয়ার ফলে সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়ায় রপ্তানি কার্যক্রম কমপক্ষে এক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর কাঁচামালের জন্য ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইইডি) সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠন দুইটি — বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ — সেবা প্রদান করছে। কার্গো ভিলেজটি তৈরি পোশাক ছাড়া ওষুধ শিল্পের উদ্যোক্তারা কাঁচামাল আমদানির জন্য এবং কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে শাকসবজি ও অন্যান্য পচনশীল পণ্য রপ্তানির জন্য ব্যবহার করা হয়।
